কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ভালোভাবে জীবনযাপন করাটাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই প্রায় নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষেরা। গর্ভবতী নারীদেরও এটা একটা সমস্যা। কোষ্ঠকাঠিন্যের ভয়ে তারা অনেক কিছুই খেতে ভয় পান। কোনটা খেলে যে স্বস্তি পাবেন, আর কোনটা খেলে কষ্ট চরমে উঠবে, বুঝতে পারেন না।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে হলে হজমের দিকে নজর দিতে হবে। এর জন্য ওষুধ তো অনেক রয়েছে, কিন্তু ওষুধের সাইড এফেক্টও থাকে। এর থেকে ভালো হয় যদি ঘরে বসেই এই সমস্যার সমাধান করা যায়। আর এ ক্ষেত্রেই আপনি ফলের রস বা জুসের সাহায্য নিতে পারেন।
জুসের আছে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার। আর আছে প্রচুর পরিমাণ পানি। এই পানি মল নরম করে। ফাইবার মল তৈরি হতে আর শরীর থেকে তা নির্গত হতে সাহায্য করে। সরবিটল নামক এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট থাকে জুসে যা মল পরিষ্কার করে। এছাড়া জুসের মধ্যে যে ভিটামিন বা মিনারেল থাকে তা তো আমাদের শরীরের সার্বিক বিকাশের জন্য খুবই উপকারী। জেনে নিন কী কী জুস খাবেন-
আপেলের রস-
আপেলে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবারের মতো উপকারী সব উপাদান। এতে আছে ল্যাক্সেটিভ গুণ। আপেলের রসের সঙ্গে মৌরি গুঁড়া করে পান করলে তা মলের মধ্যে পানির অংশ যোগ করে মল নরম করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে আপেলের রস খান।
কীভাবে খাবেন :
বীজ ছাড়ানো ১টি আপেল, ১/২ চামচ মৌরি গুঁড়া ও ১/২ কাপ পানি নিন। চামড়া ছাড়িয়ে আপেলের টুকরোগুলো পানি মিশিয়ে ব্লেন্ড করুন। রসের সঙ্গে একটু মৌরি গুঁড়া মেশান। এরপর খেয়ে ফেলুন।
নাসপাতির রস-
নাসপাতিতে রয়েছে ফাইবার ও সরবিটল। মল নির্গমনে বাঁধা দূর করে সরবিটল নামক উপাদানটি। এর সঙ্গে মেশাতে পারেন লেবুর রস, যার মধ্যে আছে ভিটামিন, মিনারেল। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কীভাবে খাবেন :
বীজ বের করা ২টি নাসপাতি, ২ চামচ লেবুর রস ও এক চিমটি লবণ নিন। প্রথমে নাসপাতি কেটে ব্লেন্ড করে নিন। খোসা চিপে রস আলাদা করে যোগ করুন লেবুর রস ও লবণ। ভালো করে মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন।
কমলার রস-
ভিটামিন সি, মিনারেল, ডায়াটেরি ফাইবার ইত্যাদি উপাদান সমৃদ্ধ একটি ফল হলো কমলালেবু। এর রস মলে পানি শোষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে, মল নরম করে।
কীভাবে খাবেন :
১ কাপ কমলালেবুর কোয়া ও ১/২ চামচ লবণ নিন। কমলার কোয়া ব্লেন্ড করে নিন। রস বের করে তার মধ্যে খানিক লবণ মিশিয়ে খেয়ে নিন।
জুস খাওয়ার নিয়ম-
একসাথে অনেকটা জুস খেতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। রোজ এক কাপ করে জুস খেতে পারেন। তবে জুসে বাড়তি কোনো যোগ করবেন না। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এই জুস পান করুন। চাইলে সঙ্গে মেশাতে পারেন জিরা গুঁড়ো। এতে স্বাদ বাড়বে। পাশাপাশি দেহের বাজে টক্সিনও দূর হবে।
এসব জুসের পাশাপাশি লেবুর রস ও আলুবোখরার রসও খেতে পারেন। এগুলোও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি দৈনিক অন্তত ২.৫ লিটার পানি পানের অভ্যাস করুন।